🧩অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারের (ASD) তিনটি স্তর – বুঝুন, গ্রহণ করুন, সহায়তা করুন

অটিজম কোনো রোগ নয় — এটি একটি ভিন্নধর্মী চিন্তা, অনুভূতি ও আচরণের ধরন। আমরা সবাই যেমন আলাদা, ঠিক তেমনই অটিজম নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুরাও তাদের নিজস্বতায় অনন্য। তবে সহায়তার মাত্রা অনুযায়ী, অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (ASD) সাধারণত তিনটি স্তরে ভাগ করা হয়:

🔹 ASD স্তর ১: হালকা সহায়তা প্রয়োজন
এই স্তরের শিশুরা সাধারণত চোখে চোখ রেখে কথা বলতে সংকোচ বোধ করে, নতুন পরিবেশে সহজে মিশে যেতে পারে না।
📌 উদাহরণ: রিয়াদ (৭) স্কুলে যেতে ভালোবাসে, কিন্তু একা খেলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। বন্ধুরা ডাকলেও সে মাঝে মাঝে সাড়া দেয় না। সঠিক নির্দেশনা ও ধৈর্যশীল শিক্ষকের সহায়তায় রিয়াদ অনেকটাই উন্নতি করেছে।

🔹 ASD স্তর ২: মাঝারি মাত্রার সহায়তা প্রয়োজন
এই স্তরের শিশুরা স্পষ্টভাবে তাদের প্রয়োজন জানাতে পারে না। আচরণে একরকম স্থিরতা বা একঘেয়েমি দেখা যায়।
📌 উদাহরণ: ফারহান (৯) কথাবার্তা সীমিত, একই খেলনা নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা খেলতে চায়। কেউ তার খেলাটি নিলে সে চিৎকার করে বা কান্না করে। নিয়মিত থেরাপি ও স্পেশাল এডুকেশনের মাধ্যমে তার আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে।

🔹 ASD স্তর ৩: তীব্র সহায়তা প্রয়োজন
এই স্তরের শিশুরা কথাবার্তা বলতে পারে না বা খুব কম বলে, আশেপাশের পরিবেশে অতিরিক্ত সংবেদনশীল। আত্মনিয়ন্ত্রণের সমস্যা দেখা যায় এবং দৈনন্দিন কাজেও পূর্ণ সহায়তা প্রয়োজন হয়।
📌 উদাহরণ: রুবাইয়াৎ (৬) কথা বলে না, শব্দ ও আলোতে খুবই অতিসংবেদনশীল। সে মাঝে মাঝে নিজেকে আঘাত করে ফেলে। তার জন্য প্রতিদিন একজন কেয়ারগিভার, থেরাপিস্ট ও স্পেশাল এডুকেশনের প্রয়োজন হয়।

❤ আমরা কী করতে পারি?

🔸 বোঝার চেষ্টা করুন: প্রতিটি ASD শিশুর আচরণই একটি ভাষা — শুধু আমাদের তা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা দরকার।
🔸 সহানুভূতির চোখে দেখুন: তারা ভিন্নভাবে চিন্তা করে — সেটি কোনো দুর্বলতা নয়, বরং একটি আলাদা শক্তি।
🔸 সহায়তা দিন: প্রাথমিক পর্যায়ে সঠিক সহায়তা, থেরাপি ও ভালোবাসা ASD শিশুর জীবন বদলে দিতে পারে।

একটি আলাদা পৃথিবী গড়তে হলে, আগে আমাদের মনটা আলাদা করতে হবে — একটু বেশি মানবিক, একটু বেশি সহানুভূতিশীল।

✨ “সব শিশু এক নয়, কিন্তু সব শিশুই ভালোবাসার যোগ্য।” ✨